মেয়েদেরকেই প্রতিবাদী হতে হবে
মেয়েদেরকেই প্রতিবাদী হতে
হবে
আহমদ আল হুসাইন
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
মেলা । পাকিস্তানি প্যাভিলিয়নের গেট । উপচে পড়া ভিড় । জন বিস্ফোরণ । মানুষ আর
মানুষ । ছেলে , বুড়ো , জোয়ান । তরুণ , তরুণী । সবাই এসেছে মেলায় । ছুটির দিন শুক্রবারের এই ভিড় পুরো মেলা জুড়েই ।
পাকিস্তানি প্যাভিলিয়নের গেটের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম আমি আর আমার বন্ধু শশাঙ্ক কুমার
প্রামানিক । উদ্ভট টাইপের এক ঘটনা ঘটলো আমাদের চোখের সামনেই । লাইভ দেখলাম । ভালোই
লাগলো ।
শ্যাম্পু করা লম্বা চুল ,
জিন্স পরা বেশ স্মার্ট সুন্দরী এক তরুণী
পাকিস্তানি প্যাভিনিয়নের গেট দিয়ে ঢুকছিল ভিতরে । লম্বা এবং দেখতে ভদ্র টাইপের এক
তরুণ মেয়েটিকে ধাক্কা দিয়েছিল । টাচ করেছিল মেয়েটির শরীরের বিশেষ কোন স্থানে । টাচ
স্কিনে টাচ করলে যা হয় তাই হল । অপশন পাল্টে গেল । মুহূর্তেই বদলে গেল দৃশ্যপট ।
প্রতিবাদী হয়ে উঠল মেয়েটি । কষে একটা চড় বসিয়ে দিল ভদ্র টাইপের সেই অভদ্র ছেলেটির
গালে । কিংকর্তব্যবিমুর উপস্থিত সবাই । আমরাও । ছেলেটি হিংস্র কুকুরের মত ঝাপিয়ে
পড়ে আরও বেশি ভুল করে বসলো । মেয়েটি অনেকটা কুংফু স্টাইলের মত করে সাথে সাথেই একটা
ঘুষি বসিয়ে দিল ওই ছেলেটির নাকে । ফ্লোরে পড়ে গেল ছেলেটি । এবার কলার ধরে বেধর কিল
ঘুষি শুরু করল মেয়েটি । মেয়েটি যে কুংফু জানে তার মারের ধরন দেখে বুঝা গেল সহজেই ।
চারপাশের অনেকেই বুঝে উঠার আগেই নাস্তানাবুদ ছেলেটি । কুত্তার বাচ্চা অনেকক্ষণ ধরে
বিরক্ত করছিলি । কিছু বলি নাই । বলেই আবার মার । উপস্থিত জনতা আগিয়ে না আসলে মনে
হয় ছেলেটি আজ নরকেই যেত ।
হাততালি দিয়েছি আমরা ।
দিয়েছেন আরও অনেকেই । বাহবা দিছেছি । একশবার
স্যলুট দিয়েছি মেয়েটিকে । মেয়েটিকে ঘিরে তখন রীতিমত জটলার ডালপালা গজানো
শুরু করেছে । তার নাম কি ? বাসা কোথায় ?
কোথায় পড়ালেখা করে ? হাজার প্রশ্নের ঝিরঝিরে বৃষ্টি । নামটা ভালো বুঝতে পারি নাই
। তবে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী । তখন কেন যেন মনে হল সব মেয়েদেরই কুংফু
শিখা দরকার । প্রতিবাদের ভাষা তাদের শেখা প্রয়োজন । তাদের জন্য এটা এখন সময়ের দাবি । আইন প্রয়োগ করে ইভটিজিং আর ধর্ষণের মত সামাজিক ভাইরাসের অস্ত্রপাচার
অনেকটাই অসম্ভব । আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে ধর্ষণকারীরা ছাড়া পেয়ে যায় । বিচার হয় না
তাদের । সে ক্ষেত্রে মেয়েদেরকেই প্রতিবাদী হয়ে উঠতে হবে । বাসে , ট্রেনে , পথে , ঘাটে সবখানেই এই প্রতিবাদের কালচার চালু করতে হবে ।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেল
ছাত্রীধর্ষণ ঘটনার পর মুম্বাইয়ে ধর্সণ থেকে আত্মরক্ষায় নারীদের মধ্যে ছুরি ও
মরিচের গুঁড়া বিতরণ করেছে কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল শিব সেনা । শহরে ও এর
আশেপাশের এলাকায় নারীদের মধ্যে তারা তিন ইঞ্চি(সাত সেন্টিমিটার)ফলা বিশিষ্ট ২১
হাজার ছুরি বিলি করেছে। খবরে দেখলাম তাদের নাকি পরিকল্পনা আছে এক লাখ ছুরি
বিতরণের। উদ্যোগ টা অবশ্যই ভালো । প্রশংসনীয় । বাংলাদেশেও এমনটি করলে মনে হয় খারাপ
হয় না । যেভাবেই হোক মেয়েদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতেই হবে । নারীদের প্রতি দৃষ্টি
পরিবর্তন করুন এমন নীতি কথার ওষুধ দিয়ে আর কাজ হচ্ছে না । হাই পাওয়ারের
অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে ।
সেই ছেলেটিকে উপস্থিত
জনতা গণ পিটুনি দিতে চেয়েছিল । পুলিশের সহায়তায় ছেলেটি বেচে গেছে । এত এত মানুষের
সামনে একটা মেয়ের হাতের মার খেয়ে ছেলেটির যে শিক্ষা হয়েছে আমার মনে সে আর এই ধরনের
কাজ করবে না । দেখতে ভদ্র এই সব অভদ্র , জানোয়ার , লম্পট , ইভটিজার ছেলেদের জন্য মেয়েদের হাতের পিটুনি ছাড়া ভালো আর
কোন ঔষধ নেই ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন