জাহাঙ্গিরের কান্নায়
আওয়ামীলীগের ভরাডুবির আশঙ্কা
আহমদ আল হুসাইন
চার সিটি কর্পোরেশন
নির্বাচনে চার শূন্যতে হেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের । তৃণমূল
নেতা কর্মী থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গলায় ঝুলছে এখন হতাশার তাবিজ।
অন্ধকারের এক মায়াবী জগতের হাতছানি উপলব্ধি করতে পারছেন অনেকেই । বিশেষ করে টক শো
আর মিডিয়ায় যে সব নেতারা কথার ফুলঝুরি ছড়াতেন তারাও এখন অনেকটাই সতর্ক অবস্থানে ।
সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কথাতে হাস্যরস নেই বললেই চলে । চেহারায় কেমন যেন একটা
অস্থিরতার প্রলেপ। তাই যে কোন কিছুর বিনিময়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে
জিততে চায় আওয়ামীলীগ ।
হল মার্ক কেলেংকারি,শেয়ার বাজার লুট,পদ্মাসেতুর দুর্নীতি,রানা প্লাজা ধশ
আর রেশমা অভিনীত ১৭ দিনের কুখ্যাত নাটক, আমার দেশ ইসলামিক টিভি আর দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ, রাতের অন্ধকারে হেফাজত নিধন, গুম খুন আর হামলা মামলার মহাকাব্য রচনা, ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টা, ছাত্রলীগ আর যুবলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সাগর রুনির হত্যাকাণ্ড এ সরকারের মদদ সহ এই সরকারের সব
অপকর্মের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছে জনগণ এই চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ।
ব্যালট কে বুলেট বানিয়েছে জনগণ । আর এতেই অনেক টা ধরাশায়ী আওয়ামী সরকার । গাজীপুর
নির্বাচনে জয়ী হতে না পাড়লে ইজ্জত হারাবে সরকার । এই কথা মাথায় রেখেই জাহাঙ্গির কে
নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য করা হয়েছে । কিন্তু জাহাঙ্গিরের এই সরে দাঁড়ানোর
নাটক বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক মান্নানের জন্য ।
মনোনয়নপত্র বাতিলের পর
আপিল। আদালতের নির্দেশে প্রতীক পেয়ে প্রচার শুরু।সেদিন রাতেই প্রার্থীর ‘গায়েব’ হওয়া। এরপর নানা
গুজব। অবশেষে পাঁচ দিন পর হাজির হলেন তিনি। গত রোববার বিকেলে গাজীপুর জেলা আওয়ামী
লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কাঁদতে কাঁদতে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
গাজীপুরের সাধারণ ভোটাররা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে শাসক দলের এই নাটককে মোটেও ভালোভাবে
নেন নি । জাহাঙ্গীর আলমের কান্না যদি ব্যালট ছুঁয়ে দেয় আর আবারও যদি ব্যালট বুলেটে
পরিণত হয় । তাহলে আওয়ামীলীগের পরাজয় সুনিশ্চিত। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জয়ী হওয়ার
যতটুকু সম্ভাবনা ছিল ''জাহাঙ্গির নাটকে''
সেই সম্ভাবনা আর নেই। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল
মারল সরকার। ৬৪ বছর বয়সী একটা রাজনৈতিক দল যে এখন নাবালক সুলভ আচরণ করবে এটা মানা
সত্যি ই খুব কঠিন ।
নির্বাচনে জয় পরাজয় যাই
হোক সুবিধার স্কোরে এগিয়ে যাবে বিএনপি। জয়ী হলে সরকারের জনপ্রিয়তা আবারও
প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সরকার কে বস্তা বন্ধী করতে পারবে দল টি । তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
দাবি আরও জোরালো হবে । দলের তৃণমুল নেতা কর্মীরা আরও সক্রিয় হবে । অপরদিকে সরকার
শিবিরে নেমে আসবে হতাশা আর নিশ্চয়তার অবলুস কালো মেঘের ঘনঘটা । আর পরাজিত হলে
নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার
প্রয়োজনীয়তার একটা সঠিক সমীকরণ দাড় করানো খুব বেশি সহজ হবে দলটির জন্য । সবশেষে
সরকার দলীয় সংগঠন ছাত্রলিগ আর যুবলীগের টেন্ডার নিয়ে সংঘর্ষে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনা
নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন