আহমদ আল হুসাইন
উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ ।কথা
টা এখন সত্যি। একেবারে নিরেট সত্যি । এক গ্রুপ যখন ইচ্ছে হরতাল দিচ্ছে।
অবরোধ দিচ্ছে। বাসে আগুন দিচ্ছে। রেল লাইনের ফিস প্লেট রাতের অন্ধকারে তুলে
ফেলছে। লাইনচ্যুত হচ্ছে ট্রেন । হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ভেঙ্গে পড়ছে হচ্ছে রেল
যোগাযোগ । আবার আরেক গ্রুপ নিরাপত্তার নামে বালুর ট্রাকের বাইস্কপ
দেখাচ্ছে। হামলা, মামলা, পুলিশের গুলি আর সেই সাথে গণগ্রেপ্তার। গলা টিপে
ধরছে মিডিয়ার। কিন্তু কেন এসব হচ্ছে ? উত্তর হয় তো সবারই জানা ।
গণতন্ত্রের
কিচ্ছা শুনাতে উনারা ভালই পারেন। সম্ভাবত গণতন্ত্রের এই কিচ্ছা কাহিনী
শুনানোর উপর ওরা স্কলার, পিএইচডি ধারী। কে কোথায় থেকে পিএইচডি জানা না
থাকলেও বুঝতে পারি যে উনারা এই ফিল্ডে বেশ এক্সপার্ট । গণতন্ত্র রক্ষা
দিবসের নামে সরকারের যে ভণ্ডামি তার কোন যৌক্তিকতা নেই। মিডিয়ার টুটি টিপে
ধরা, বাক স্বাধীনতা কে হরণ করা, কথায় কথায় গ্রেপ্তার আর বন্দুকের নল দেখানো
গণতন্ত্র বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও নেই।
দমন পীড়ন নীতি কে তো আর গণতন্ত্র বলে না ।
ভণ্ড
পীরের থেকেও ভয়ংকর এই সরকার। পীরের ভণ্ডামির একটা সিমা রেখা আছে কিন্তু
সরকারের ভণ্ডামির কোন সীমা রেখা নেই । এই ভণ্ডামি বুঝারও উপায় নেই।
নিরাপত্তার নামে বালুর ট্রাক, আবরুদ্ধ করে রাখা, পিপার স্প্রে আর মিডিয়ার
বেহায়া নির্লজ্জের মত মিথ্যাচার করা। টিভি তে লাইভ দেখা যাচ্ছে যে গেটে
তালা লাগানো। পুলিশের নয় স্তরের বেষ্টনী আর হাস্যকর বালুর ট্রাক। এরপরে
সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মিডিয়ায় বেহায়াপনা,’’খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ
নন’’ ।
বিএনপির
জায়গায় এখন আওয়ামী-লীগ থাকলে এখন দেশে কি হত ? শেখ হাসিনাকে বালুর ট্রাক
দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখলে, পিপার স্প্রে মারলে আওয়ামী-লীগ কি করতো একবার ভেবে
দেখুন । একটু কল্পনা করে দেখুন । রক্ত মাখা লগি বৈঠার ছবি চোখের সামনে
ভেসে উঠবে ।
নিখুঁত
ভাবে ই স্বৈরাচারের আচরণ করছে সরকার। সরকারের গনবিরোধী, হটকারি মনোভাব দেখে
এটা অনেকটা স্পষ্ট যে এরা নতুন স্বৈরাচার না । এরা অভিজ্ঞ। পূর্বপুরুষদের
কাছ থেকে এরা স্বৈরাচারের কায়দায় দেশ চালানোর অনেক নথিপত্র পেয়েছে। জাস্ট
স্টাডি করছে আর খেলা দেখাচ্ছে ।
গতকাল
ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেনরাজধানীতে সভা-সমাবেশেরওপর
অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল আছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশেরজন্য
সেটা শিথিল হতে পারে। দুই দলের জন্য কেন দুই নীতি? এমন প্রশ্ন করা হলেতিনি
বলেন, যা বোঝার বুঝে নিন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এটা কি আওয়ামী-লীগের নিজস্ব
গণতন্ত্র ? এজন্যই কি দুই দলের জন্য দুই নীতি ? বাহ ! দারুণ তো ।
বিএনপি
সমাবেশ করতে চাইলে ডিএমপি অনুমতি দেয় না । উল্টো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
অনুমতির জন্য ডিএমপি অফিসে গেলে দায়িত্বশীল কারো দেখাই পাওয়া জায় না । আর
আওয়ামী-লীগের সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য পারলে ডিএমপি ই আওয়ামী-লীগের
কাছে আসে । জনগণ কি এখনও এত টা বোকা আছে ?
হয়
তো এটা সত্য যে বিএনপি কিছু টা নাশকতা করছে ? এই নাশকতার সাথে কি সরকার
জড়িত না ? গতকাল আওয়ামী-লীগের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এর কেন্দ্রীয় অফিসে ককটেল
হামলা হয়েছে । আটক ব্যক্তির পরিচয় কি ? যুবলীগ কর্মী ? নিজ দলের কার্যালয়ে
যে দলের কর্মী ককটেল ছুড়তে পারে সে আর কি কি করতে পারে তা হয় তো সহজেই
অনুমেয়। এমন অনেক উদাহরণ কিলবিল করছে আমাদের চারপাশে ।
নিরাপত্তা
মানে যদি বালুর ট্রাক হয়, গণতন্ত্র মানে যদি অবরুদ্ধ করে রাখা, স্বাধীনতা
হরণ করা, দমন পীড়ন আর পুলিশের গুলি হয়, তবে গণতন্ত্রের জনক সোলোন ব্যর্থ ই
হয়েছেন । সরকারের মন্ত্রীরা এমনভাবে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন যাতে
স্পষ্ট হচ্ছে বিরোধী জোটকে তারা চরম শত্র“ বলেই বিবেচনা করেন। শুধু দলের
শত্র“ই নয় বিরোধী জোটকে তারা রাষ্ট্রের শত্র“ বলেও আখ্যায়িত করছেন। কোন কোন
মন্ত্রী তো বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতা-নেত্রীকে পর্যন্ত গালিগালাজ করতে
ছাড়ছেন না। অথচ এরাই নাকি দেশ কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এরাই নাকি
ক্ষুধা ও দরিদ্র মুক্ত দেশ জাতিকে উপহার দেবেন ।
অগণতান্ত্রিক
চর্চাই এখন আপডেট গণতন্ত্র । দুই জনের জন্য দুই নীতি ই এখন গণতন্ত্র ।
বলতে গেলে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব ই গণতন্ত্রের আপডেট ভার্শন ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন